
পশ্চিমা বিশ্বের দুর্গন্ধ মিশ্রিত নারীনীতির নাম নারীবাদ। যার কবলে পরে ঈমান হারা হচ্ছে শত-শত নারী ও পুরুষ। আল্লাহর দেওয়া বিধানের বাহিরে তাদের চাওয়া দুনিয়ার খাহেশাত পূরণে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। অথচ আল্লাহর বিধানের বাহিরে আদৌ কোনো স্বাধীনতা নেই। যা আছে কেবলই তা ক্ষতিকর—মনুষ্য সভ্যতার জন্য। আর সে ক্ষতিকর বস্তু থেকে মানুষকে এক আল্লাহর পথের আহ্বানই নুসাইবাদের কাজ। সে নুসাইবারা—যারা নুসাইবা বিনতে কাব রাদিআল্লাহু আনহার উত্তরসূরি।
"নুসাইবা: এক সত্যান্বেষী নারী" - আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ
বইটির নাম "নুসাইবা: এক সত্যান্বেষী নারী" এবং এটি লেখক আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ কর্তৃক রচিত একটি অনুপ্রেরণামূলক ও শিক্ষা প্রদানকারী বই। এই বইটিতে ইসলামি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, যিনি ছিলেন সাহসী, নিবেদিত, ও সত্যের প্রতি অটুট শ্রদ্ধাশীল, সেই নারীর জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নুসাইবা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন সাহাবী মহিলা, যিনি ইসলামের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি প্রমাণ করেছেন যে, নারীদেরও ইসলামিক সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং তারা শুধুমাত্র পরিবারের সদস্য নয়, বরং সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
নুসাইবা (রাঃ) এর পরিচিতি
নুসাইবা বিনত কাব (রাদিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন একটি সাহসী এবং বীর নারী, যিনি ইসলামের প্রথম যুগে সাহাবী হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর শিষ্য ছিলেন এবং ইসলামের প্রতি তার অটুট বিশ্বাস ও সততা ছিল। তাঁর জীবনের ইতিহাস আমাদের প্রেরণা দেয়, কারণ তিনি প্রমাণ করেছেন যে, একজন নারীও ইসলামী সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন এবং তিনি ঐতিহাসিক মুহূর্তে অংশগ্রহণ করেছেন যা ইসলামিক ইতিহাসের অন্যতম মহৎ অধ্যায়।
ইসলামের জন্য সংগ্রাম
নুসাইবা (রাঃ) ইসলামের প্রচারের জন্য কঠোর সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইসলামের প্রথম যুগে মদিনার যুদ্ধগুলোতে উপস্থিত ছিলেন এবং সাহসী ভূমিকা পালন করেন। তাঁর জীবনে একটি অত্যন্ত স্মরণীয় ঘটনা ছিল, যেদিন তিনি উহুদ যুদ্ধের সময় নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর পাশে দাঁড়িয়ে এক সাহসী যোদ্ধা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এই যুদ্ধের সময় তিনি নিজেকে চূড়ান্তভাবে উৎসর্গ করেন এবং নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নবী (সা.)-এর নিরাপত্তা রক্ষার জন্য লড়াই করেন।
বীরত্বপূর্ণ জীবন
নুসাইবা (রাঃ) শুধু একজন ধর্মপ্রাণ নারী ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সাহসী যোদ্ধা, যিনি ইসলামের জন্য সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। উহুদ যুদ্ধের সময় যখন মুসলমানদের ওপর আক্রমণ শুরু হয়েছিল, তিনি পিছিয়ে না গিয়ে সাহসিকতার সাথে জবাব দেন। যুদ্ধের ময়দানে তিনি নবী (সা.)-এর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে রক্ষা করতে চেষ্টা করেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেন যে, নারীরা শুধু শান্তিপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী নয়, বরং প্রয়োজন হলে তারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং ধর্মের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত।
নারীদের জন্য আদর্শ
নুসাইবা (রাঃ) ইসলামের ইতিহাসে এক আদর্শ নারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। তিনি একাধারে মায়ের ভূমিকা পালন করেছেন, একজন স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সর্বোপরি একজন সাহাবী নারী হিসেবে ইসলামের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। তাঁর জীবন কেবল নারীদের জন্য নয়, বরং সকল মুসলমানের জন্য একটি জীবন্ত প্রেরণা, যা আমাদের শেখায় যে, ইসলাম কেবল পুরুষের জন্য নয়, বরং নারীও ইসলামী সমাজের অঙ্গ এবং তাকে অবহেলা করা ইসলামের পক্ষে অনুচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা
নুসাইবা (রাঃ) ছিলেন একজন শিক্ষিত ও বুদ্ধিমত্তার অধিকারী নারী। তিনি নিজের পারিবারিক জীবন ও সমাজের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর শিক্ষাগত দিকটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তাঁর শিক্ষার মাধ্যমে তিনি ইসলামের মূল বিষয়াবলি জানতেন এবং সেগুলি অন্যদের মাঝে প্রচার করতেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে, একজন নারীও ইসলামের প্রচারক হতে পারেন এবং সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
আন্তরিক বিশ্বাস ও ঈমান
নুসাইবা (রাঃ) ছিলেন একজন আন্তরিক বিশ্বাসী, যার ঈমান ছিল অটুট। তাঁর জীবনের প্রতিটি দিক ছিল ইসলামী মূল্যবোধের উপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি তাঁর পরিবার, সমাজ এবং ধর্মের প্রতি নিষ্ঠাবান ছিলেন। তাঁর বিশ্বাস এবং ঈমান ছিল এত দৃঢ় যে, তিনি ইসলামের জন্য নিজের জীবনও উৎসর্গ করতে প্রস্তুত ছিলেন। তার জীবনের এই দৃষ্টান্ত আমাদের শেখায় যে, একজন মুসলিমের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা এবং তাঁর রাস্তায় সবকিছু ত্যাগ করা।
একটি শিক্ষা ও উপদেশ
বইটি "নুসাইবা: এক সত্যান্বেষী নারী" কেবল একটি ইতিহাসের গল্প নয়, এটি আমাদের জন্য একটি শিক্ষা। নুসাইবা (রাঃ)-এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের শেখায় যে, ইসলামের জন্য যতটা প্রয়োজন ত্যাগ এবং সংগ্রাম করা হয়, ততটাই প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। তিনি প্রমাণ করেছেন যে, একজন নারীও ইসলামী সমাজের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান এবং তার কর্ম এবং জীবন পৃথিবীজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি নিদর্শন হতে পারে।
উপসংহার
"নুসাইবা: এক সত্যান্বেষী নারী" বইটি এক ইতিহাসের, সাহসিকতার এবং ইসলামের প্রতি আনুগত্যের গল্প। এটি মুসলিম সমাজকে, বিশেষত মুসলিম নারীদেরকে, আরও শক্তিশালী, সাহসী এবং আত্মবিশ্বাসী হতে উদ্বুদ্ধ করে। বইটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ইসলামে নারী এবং পুরুষের ভূমিকা সমান গুরুত্বপূর্ণ এবং নারীরা যেকোনো ক্ষেত্রে ইসলামী সমাজে প্রভাবিত হতে পারেন। নুসাইবা (রাঃ)-এর জীবন একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা আমাদের শিক্ষা দেয় যে, সত্যের জন্য সংগ্রাম করা এবং আল্লাহর পথে চলা আমাদের সবার কর্তব্য।
Name | নুসাইবা |
Category | নারী সম্পর্কীয় |
Author | আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ |
Edition | ১ম প্রকাশ, ২০২৫ |
No of Page | 128 |
Language | বাংলা |
Publisher | রাইয়ান প্রকাশন |
Country | বাংলাদেশ |
Weight | 0.17 Kg |
Read Now
Buy Now
সন্তান, সে তো আসমান থেকে পাওয়া। সন্তান, সে তো স্বর্গ থেকে আসা। সন্তান, সে তো স্বপ্ন দিয়ে বোনা সোনা-রঙা সোনালি ফসল। সন্তান পৃথিবীর সবচেয়ে সুখের সম্পদ। সন্তান চোখের শীতলতা, অন্তরের কোমল উষ্ণতা, হৃদয়ের গহীনে সযত্নে চাষ-করা এক টুকরো মুক্তো। সন্তান...
রাসুল (সাঃ) এর সময় থেকেই অনেক মানুষ কুরআনকে আল্লাহর বাণী হিসেবে গ্রহণ করেন না। তাঁরা মনে করেন কুরআন রাসুল (সাঃ) এর রচিত গ্রন্থ। অথচ কুরআনের মধ্যেই প্রমাণ রয়েছে যে, এমন গ্রন্থ রচনা করা মানব বা জ্বিন কারো পক্ষেই ব্যক্তিগত কিংবা...
অনুবাদক : শাফায়েত উল্লাহ, শারঈ নিরীক্ষণ : মাওলানা আব্দুল্লাহ আল হাসানদ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নবী ﷺ-কে কী পরিমাণ কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল, তা আমাদের সবারই জানা আছে। তাঁর ওপর অপবাদ দেওয়া হয়েছিল, আঘাত করা হয়েছিল তাঁর সম্মানে। তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী,...
Comments (0)